কালোজিরার উপকারিতা ও ওষধি গুন

কালোজিরার উপকারিতা ও ওষধি গুন

   প্রিয় পাঠক, আশা করি সকলে ভালো আছেন। আজকে আমরা আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি কালোজিরা নিয়ে ।কালোজিরার যত ঔষধি গুনাগুন এবং এর সুফল গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব আজকের  পোস্টে।আশা করি মনোযোগ সহকারে পোস্ট করবেন এবং উপকৃত হবেন। 

কালো জিরার ঔষধি গুনাগুণ

কালো জিরার বোটানিক্যাল নাম হচ্ছে ‘নাইজিলা সাটিভা’ (Nigella sativa), এটি পার্সলে পরিবারের একটি উদ্ভিদ। এটা রাজা টুট এর সমাধি হতে আবিষ্কৃত হয় এবং সে সময় এটা পরকালে ব্যবহার করা হয় বলে বিশ্বাস করা হত। মানুষ ২০০০ বছর ধরে ঔষধ হিসেবে কালো জিরার বীজ ব্যবহার করেছে। এটা লতাপাতা জতীয় একটি উদ্ভিদ। এর সূক্ষ্ম বেগুনি ও সাদা ফুল হয়ে থাকে।

মসলা হিসেবে কালো জিরার চাহিদা অনেক। কালো জিরার বীজ থেকে তেল পাওয়া যায়, যা মানব শরীরের জন্য খুব উপকারি। এতে আছে ফসফেট, লৌহ, ফসফরাস। এছাড়া এতে রয়েছে ক্যানসার প্রতিরোধক কেরটিন, বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধকারী উপাদান এবং অম্ল রোগের প্রতিষেধক।

কালো জিরা গাছের বীজে প্রায় ১০০টি রাসায়নিক যৌগ আছে। এখনে নাম সহ কয়েকটি চিহ্নিত করা হলঃ

রোমান সাম্রাজ্যের মত প্রাচীন সভ্যতাগুলো কালোজিরা কে সব আরোগ্য (Panacea) বলা হত যার আক্ষরিক অর্থ সর্বব্যাধির ঔষধ (cure all)। রোম এর ঔষধ হিসাবে কালোজিরার ব্যাপক ব্যবহার ব্যাখ্যা করা হয়েছে। কালো জিরা প্রোটিন, ভিটামিন B1, ভিটামিন B2, ভিটামিন B3, ক্যালসিয়া ও লৌহ মত পুষ্টি সমৃদ্ধ ওষধি।

কালো জিরা মূল স্বাস্থ্য উপকারিতা গুলোর কিছু নিচে উল্লেখ করা হল:

মাধ্যমে শরীরে রক্তচাপ এর স্বাভাবিক মাত্রা সুনিশ্চিত করতে সহায়তা করে

১। কালোজিরা নিন্ম রক্তচাপকে বৃদ্ধি এবং উচ্চ রক্তচাপকে হ্রাসের মাধ্যমে শরীরে রক্তচাপ এর স্বাভাবিক মাত্রা সুনিশ্চিত করতে সহায়তা করে

২। এটি শ্বসনতন্ত্র, সংবহন এবং ইমিউন সিস্টেম, পেট এবং অন্ত্র, কিডনি এবং এমনকি লিভার সম্পর্কিত রোগের চিকিত্সা করে।

৩। বৃদ্ধি-কালোজিরা মায়েদের বুকের দুধের প্রবাহ এবং স্থায়ীত্ব বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

৪। কালোজিরা ডায়াবেটিক রোগীদের রক্তের শর্করা কমিয়ে ডায়াবেটিক আয়ত্তে রাখতে সহায়তা করে।

৫। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রন- কালোজিরা নিন্ম রক্তচাপকে বৃদ্ধি এবং উচ্চ রক্তচাপকে হ্রাসের মাধ্যমে শরীরে রক্তচাপ এর স্বাভাবিক মাত্রা সুনিশ্চিত করতে সহায়তা করে।

৬। চুল পড়া বন্ধ করে- কালোজিরা চুলের গোড়ায় পুষ্টি পৌঁছে দিয়ে চুলপড়া বন্ধ করে এবং চুল বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

৭। কালোজিরা মস্তিস্কের রক্ত সঞ্চলন বৃদ্ধির মাধ্যমে স্মরণ শক্তিবাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে।

৮। শিশুর দৈহিক ও মানসিক বৃদ্ধি-কালোজিরা শিশুর দৈহিক ও মানসিক বৃদ্ধিতে ত্বরান্বিত করতে সহায়তা করে।

৯। দেহের সাধারণ উন্নতি-নিয়মিত কালোজিরাসেবনে শরীরের প্রতিটি অঙ্গ প্রত্যঙ্গকে সতেজ করে ও সার্বিকভাবে স্বস্থ্যের উন্নতি সাধন করে।

১০। অরুচি, উদরাময়, শরীর ব্যথা, গলা ও দাঁতের ব্যথা, মাইগ্রেন, চুলপড়া,  সর্দি, কাশি, হাঁপানি নিরাময়েকালো জিরা সহায়তা করে। ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসাবেকালো জিরা সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

১১। চুলপড়া, মাথাব্যথা, অনিদ্রা, মাথা ঝিমঝিম করা, মুখশ্রী ও সৌন্দর্য্য রক্ষা, অবসন্নতা-দুর্বলতা, নিষ্ক্রিয়তা ও অলসতা, আহারে অরুচি, মস্তিষ্ক শক্তি তথা স্মরণ শক্তি বাড়াতেও কালো জিরা উপযোগী।

১২। মাথা ব্যথায় কপালে উভয় চিবুকে ও কানের পার্শ্ববর্তী স্থানে দৈনিক ৩/৪ বার কালো জিরা তেল মালিশ করলে উপকার পাওয়া যায়।

১৩। চায়ের সঙ্গে নিয়মিত কালো জিরা মিশিয়ে অথবা এর তেল বা আরক মিশিয়ে পান করলে হৃদরোগে যেমন উপকার হয়, তেমনি মেদ ও বিগলিত হয়।

১৪। জ্বর, কফ, গায়ের ব্যথা দূর করার জন্য কালো জিরা যথেষ্ট উপকারী বন্ধু। এতে রয়েছে ক্ষুধা বাড়ানোর উপাদান। পেটের যাবতীয় রোগ-জীবাণু ও গ্যাস দূর করে ক্ষুধা বাড়ায়।

১৫। কালো জিরায় রয়েছে অ্যান্টিমাইক্রোরিয়াল এজেন্ট, অর্থাৎ শরীরের রোগ-জীবাণু ধ্বংসকারী উপাদান। এ উপাদানের জন্য শরীরে সহজে ঘা, ফোড়া, সংক্রামক রোগ (ছোঁয়াচে রোগ) হয় না।

১৬। দাঁতে ব্যথা হলে কুসুম গরম পানিতে কালো জিরা দিয়ে কুলি করলে ব্যথা কমে; জিহ্বা, তালু, দাঁতের মাড়ির জীবাণু মরে। দেহের কাটা-ছেঁড়া শুকানোর জন্য কাজ করে। কালো জিরা কৃমি দূর করার জন্য কাজ করে।

১৭। মধ্যপ্রাচ্যে প্রচলিত আছে যে, কালো জিরা যৌন ক্ষমতা বাড়ায় এবং পুরুষত্বহীনতা থেকে মুক্তি দিতে সহায়তা করে। তবে পুরানো কালো জিরা তেল স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক।

শেষ কথাঃ প্রিয় পাঠক আশাকরি কালোজিরার যাবতীয় ঔষধি গুনাগুন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করতে পেরেছি। তারপরো যদি কোন সমস্যা থাকে থাকে আমাদের  জানাতে ভুলবেন না। ধন্যবাদ সাথে থাকার জন্য।

admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *