পুদিনা পাতা খাওয়ার নিয়ম ও এর ঔষধি গুনাগুন 

পুদিনা পাতা খাওয়ার নিয়ম ও এর ঔষধি গুনাগুন 

 

প্রিয় পাঠক, আজকে আমরা আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি পুদিনা পাতা খাওয়ার নিয়ম ও এর ঔষধি গুনাগুন  নিয়ে। অনেকেই ইন্টারনেট সার্চ করে থাকেন পুদিনা পাতা কিভাবে খেতে হয় ও এর ঔষধি গুনাগুন সম্পর্কে । তো সে সম্পর্কে আজকে বিস্তারিত আলোচনা করব  এই পোস্টে। মনোযোগ সহকারে পড়ুন, আশা করি উপকৃত হবেন। 

 

পুদিনা পাতা প্রাচীনকাল থেকেই বেশ জনপ্রিয় ঔষধ হিসেবে পরিচিত। বহু রোগ আরোগ্যে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। পুদিনা পাতা এক ধরনের সুগন্ধি গাছ। এই গাছের পাতা তরি-তরকারির সাথে সুগন্ধি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। তবে বেশি ব্যবহার করা হয় নানা ধরনের বড়া তৈরির কাজে।

 

পুদিনা এক প্রকারের গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ। বিশ্বের অনেক দেশেই পুদিনার গাছ জন্মে। এর পাতা সুগন্ধি হিসাবে রান্নায় ব্যবহার করা হয়। অন্যান্য স্থানীয় নামঃ Mint, nana। এর

 

বৈজ্ঞানিক নামঃ

Mentha spicata । এটি Lamiaceae পরিবারের অন্তর্গত।

 

পেটের পীড়ায়:

এটি ইরেটেবল বাওয়েল সিন্ড্রোম [ আইবিএস ] এবং দীর্ঘস্থায়ী বদহজমের বিরুদ্ধে খুবই কার্যকর। এছাড়াও পুদিনা কোলনের পেশী সংকোচন নিয়ন্ত্রন করে।

 

অ্যাজমা:

পুদিনায় রোজমেরিক এসিড নামের এক ধরনের উপাদান থাকে। এটি প্রাকপ্রদাহী পদার্থ তৈরীতে বাধা দেয়। ফলে অ্যাজমা হয় না। এছাড়াও এ ঔষধি প্রোস্টসাইক্লিন তৈরীতে বাধা দেয়। তাতে শাসনালী পরিষ্কার থাকে।

 

এন্টিক্যান্সার:

পুদিনায় রয়েছে মনোটারপিন নামক উপাদান। এটি স্তন, লিভার এবং প্যানক্রিয়াসে ক্যান্সার হওয়া প্রতিরোধ করে। নিয়মিত পুদিনা পাতা খেলে ফুসফুস, কোলন এবং ত্বকের ক্যান্সার থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

 

ভেষজ গুণ পুদিনা:

পুদিনা খুবই উপকারী একটি উদ্ভিদ। আমাদের শরীরের নানা রোগ প্রতিরোধে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। মুখের স্বাদ বাড়াতেও এটি খুব কার্যকর। এছাড়াও আরও যেসব ক্ষেত্রে পুদিনার পাতা ব্যবহার করা যায়, তা হলো:

 

১. পুদিনার তাজা পাতা পিষে মুখে লাগিয়ে কিছুক্ষণ পর যদি তা ধুয়ে ফেলা যায়, তা হলে মুখের তৈলাক্ত ভাব দূর হয়ে যায়। ব্রণ ওঠাও বন্ধ হয়।

 

২. পুদিনার পাতা পিষে রস করে তার ভেতর দু’তিন ফোঁটা লেবুর রস দিয়ে তা পান করলে ক্লান্তিভাবও দূর হয়।

 

৩. কোনো কারণে কোনো ব্যক্তি অজ্ঞান হয়ে পড়লে তার নাকের কাছে কিছু তাজা পুদিনা পাতা ধরুন। দেখবেন, জ্ঞান ফিরে পেয়েছে লোকটি।

 

৪. পুদিনার পাতা ভালো করে পিষে তার রস ভালো করে মাথায় ব্যবহার করেন। যাদের চুলে উকুন আছে, তারা খুব উপকার পাবেন।

 

৫. শরীরের ব্যথা দূর করতে পুদিনা পাতার চা খুব কাজে দেয়।

 

৬. মাথা ও পেট ব্যথা নিরাময়েও পুদিনার পাতা খুব উপকারী।

 

৭. যাদের মাঝে মধ্যে হেঁচকি ওঠে, তারা পুদিনা পাতার সঙ্গে গোল মরিচ পিষে তা ছেঁকে নিয়ে রসটুকু পান করুন। দেখবেন হেঁচকি বন্ধ হয়ে গেছে।

 

৮. কফ-কাশিতে আমরা সাধারণত এক্সপেক্টোরেন্ট জাতীয় ওষুধ খেয়ে থাকি। এক্সপেক্টোরেন্টের কাজ হলো গলা থেকে কফ বের করে দেয়া। কিন্তু এর একটা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও রয়েছে এসব ওষুধ খেলে ঘুম ঘুম ভাব হয়। তাই এর বিকল্প হিসেবে আপনি পুদিনা পাতার সাহায্য নিতে পারেন। গরম পানিতে সামান্য পরিমাণ পুদিনা পাতা সেদ্ধ করে পান করুন। পুদিনা পাতা এক্সপেক্টোরেন্টের কাজ করবে। বোনাস হিসেবে আপনি পেতে পারেন আরো একটি বড় ধরনের উপকার। আর তা হলো পুদিনা পাতা আপনার উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করবে

 

শেষ কথাঃ প্রিয় পাঠক, পুদিনা পাতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা  করেছি, কিভাবে খেলে সঠিক ফল পাবেন ও এর ঔষধি গুনাগুন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আপনারা তাতে উপকৃত হবেন।