village-business-idea

গ্রামে ব্যবসা করার সবচেয়ে সহজ ৭টি  আইডিয়া

 

বর্তমানে গ্রামে বসে ব্যবসার আইডিয়া খুঁজছেন অনেকেই কিন্তু সঠিক আইডিয়ার না থাকার কারণে ব্যবসা করতে পারছেন না। ব্যবসার ক্ষেত্রে সঠিক সিদ্ধান্ত না থাকলে সাফল্য অনেক কষ্টকর হয়ে থাকে। সঠিক সিদ্ধান্ত থাকলে গ্রামে ব্যবসা করে আপনি একজন সফল উদ্যোক্তা হতে  পারবেন। শহরের তুলনায় গ্রামে ব্যবসা করা অনেক সহজ। তার কারণ আপনি অল্প পুজিতে ছোটখাটো একটা নিজের ব্যবসা তৈরি করে নিতে পারবেন।  

 

নিজেকে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে চাইলে, আপনাকে প্রথমেই ঝুঁকি নিতে হবে। তার কারণ হচ্ছে যে কোন ব্যবসার ক্ষেত্রে আপনি যদি ঝুঁকি না নেন তাহলে সে ক্ষেত্রে সফল হতে পারবেন না। আজকে আমরা এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনি কিভাবে সফল উদ্যোক্তা হতে পারবেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা  করব।

 

 গ্রামে ব্যবসা করার সাতটি ভিন্ন রকম  আইডিয়া নিয়ে আলোচনা করব। আশা করি সবাই মনোযোগ সহকারে লেখাটি পড়বেন। 

 

১।গবাদি পশু পালনঃ 

 

গ্রামের বাড়িতে ঘরোয়া পদ্ধতিতে গবাদি পশু লালন পালন করা একটি সহজ আইডিয়া। আরে কাজের জন্য আপনার লাগবে স্বল্প পুঁজি। 

আপনি চাইলে প্রথমে হাঁস মুরগি দিয়ে শুরু করতে পারেন। হাঁস-মুরগির ব্যবসা করতে হলে আপনাকে খুব অল্প পরিমাণ পুঁজি দিয়ে শুরু করতে হবে। বর্তমানে হাঁস-মুরগির চাহিদা  ব্যাপক। হাঁস মুরগি তে রোগবালাই কম থাকার কারণে খুব সহজেই আপনি লাভবান হতে পারবেন।

 

গরু পালন করেও আপনি সফল হতে পারেন। সেক্ষেত্রে আপনাকে একটু বেশি পুঁজির প্রয়োজন হবে। আপনি চাইলে একটি গাভী দিয়ে প্রথমে শুরু করতে পারেন, তার কারণ হচ্ছে গাভী আপনাকে দুধ দেবে সেটা বিক্রি করে আপনি বাড়তি আয় করতে পারবেন। এভাবে আপনি চাইলে খুব সহজেই নিজেকে একজন উদ্যোক্তা হিসেবে তৈরী করতে পারবেন। 

 

২। সবজির ব্যবসা 

 

সাধারণত গ্রামে প্রচুর খালি জায়গা পড়ে থাকে, এক্ষেত্রে আপনার যদি নিজের পতিত জমি থাকে সেটাকে কাজে লাগিয়ে সবজির ব্যবসা করতে পারেন। সবজি চাহিদা সম্পর্কে আমরা সবাই জানি। আপনি খুব অল্প পরিমাণ পুঁজি ইনভেস্ট করে বিভিন্ন রকম সবজি চাষ করতে  পারেন।

 গ্রামের বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করা হয়। আর এই সবজি আপনি যদি নিজে চাষ করেন এবং সেটা বাজারে বিক্রি করেন তাহলে ভালো মোটা অংকের টাকা আয় করতে পারবেন। আর যদি শহরের সাথে ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকে সে ক্ষেত্রে গ্রাম থেকে সরাসরি শহরে নিয়ে আসলে ভালো অর্থ আয় করা সম্ভব।

 

কারণ শহরে তেমন সবজির আবাদ হয় না, শহরের সবজির চাহিদা মেটাতে সেটা গ্রাম থেকেই আনতে হয়। তাই আপনি স্বল্প পুঁজি বিনিয়োগ করে এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন। এটি বর্তমান সময়ের একটি উপযুক্ত ব্যবসার  আইডিয়া। 

 

৩। হস্তশিল্পের কাজঃ

 

হস্তশিল্পের কাজের কথা আমরা মূলত সবাই জানি। আপনি চাইলে হস্ত শিল্পের মাধ্যমে নিজেকে স্বাবলম্বী হিসেবে গড়ে তুলতে পারেন। তার কারণ হচ্ছে হস্তশিল্পের চাহিদা আমাদের দেশে যুগ যুগ ধরে আছে এবং তা ভবিষ্যতেও  থাকবে।

 মানুষ  শৌখিনতার জন্য বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র কিনে থাকে, তাদের বাড়ি ঘরের শোভা বর্ধনের জন্য। 

আপনি চাইলে নিজে কাজ শুরু করতে পারেন অথবা লোক দিয়ে করাতে পারেন।  গ্রামে আপনি অল্প টাকায় অনেক ভালো ভালো হস্ত শিল্পের কারিগর পাবেন তাদের কে কাজে লাগিয়ে আপনি এটা শুরু করতে পারেন। 

পরে সেগুলো আপনি শহরে পাইকারি অথবা খুচরা বিক্রি করে ভালো আয় করতে পারবেন। হস্তশিল্পের কাজ করে অনেক মানুষ স্বাবলম্বী হয়েছে। 

 

৪। মুদি দোকানের ব্যবসা

 

গ্রামে মুদি দোকানের ব্যবসা একটি লাভজনক আইডিয়া। আপনি চাইলে অল্প কিছু পুঁজি বিনিয়োগ করে মুদি দোকানের ব্যবসা শুরু করতে পারেন। যুগ যুগ ধরে গ্রামের মানুষ এই ব্যবসা করে আসছে। 

 

মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় সব জিনিসের প্রয়োজন হয় আর এসব জিনিস ক্রয় করতে মানুষ দোকানে যায়। মানুষ এখন আর কষ্ট করতে চায়না হাতের নাগালেই সবকিছু পেতে চায়। সে ক্ষেত্রে মানুষ বাজারের দিকে না গিয়ে হাতের কাছেই যে দোকান থাকে সেখান থেকে তাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস গুলো ক্রয় করে  থাকে। আপনি মুদি দোকানের পাশাপাশি  লোড, বিকাশ , নগদ ইত্যাদি আইটেম গুলো রাখতে পারেন। সেক্ষেত্রে আপনার দোকানের বিক্রি দ্বিগুণ হারে বেড়ে যাবে। কারণ হচ্ছে মানুষ হাতের নাগালে সবকিছু পেতে  চায়। তাই ব্যবসা করে আপনি খুব সহজেই স্বাবলম্বী হতে পারবেন। 

 

৫। ফার্মেসি ব্যবসাঃ

 

বর্তমান সময়ের একটি লাভজনক ব্যবসা আইডিয়া হলো এ ফার্মেসি ব্যবসা। এক্ষেত্রে আপনি গ্রামে অথবা শহরে বাস করেন সেটা বিষয় নয়। গ্রামের মানুষের অসুখ বিসুখ হলে শহরের দিকে যেতে হয় ওষুধের জন্য। আর এই ওষুধ আমাদের এখন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মত হয়ে গেছে। ঔষধ ছাড়া যেন একটা মুহূর্ত চলে না।

 মানুষের ক্লান্তিও দুর্ভোগ কমাতে আপনি চাইলে গ্রামে বসে এ ব্যবসা শুরু করতে পারেন। মানুষ সবকিছুতে গিয়ে দামাদামি করতে পারলেও ওষুধের দোকানে ওষুধ কিনতে গেলে কোন দামাদামি করতে পারে না। যা দাম থাকে তা নিয়ে আসতে  হয়। 

আরে বাবা আপনি গ্রামে বসে করতে চাইলে, অবশ্যই আপনাকে ড্রাগ লাইসেন্স থাকতে হবে। ড্রাগ লাইসেন্স ছাড়া এ ব্যবসা করা দণ্ডনীয় অপরাধ। আর এই ব্যবসা করতে হলে আপনাকে একটু বেশি পুঁজির প্রয়োজন হবে। তবে এ ব্যবসা করা অনেক লাভজনক আমরা সবাই জানি। 

 

৬।  সার এর ডিলারশিপ ব্যবসাঃ

 

 আমরা সবাই জানি, গ্রামে সবচেয়ে বেশী চাষাবাদ হয়ে থাকে। গ্রামের চাষীদের বিভিন্ন ধরনের জিনিস চাষ করার জন্য প্রয়োজন পড়ে সার ও কীটনাশকের। আর এই সার ও কীটনাশক এর জন্য একজন কৃষকের কষ্ট করে শহরের দিকে যেতে হয়। আপনি চাইলে, সার ও কীটনাশকের ব্যবসা করে নিজেকে একজন উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে পারেন। 

বর্তমানে সার ও কীটনাশক এর চাহিদা ব্যাপক। আরে চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে আপনি চাইলে গ্রামের সার ও কীটনাশক এর ব্যবসা শুরু করতে পারেন। সেক্ষেত্রে আপনাকে একটু বেশি ইনভেস্ট এর প্রয়োজন  হবে। 

 

৭। ফুলের চাষঃ

 

আমরা জানি ফুল বিভিন্ন ধরনের কাজে ব্যবহৃত হয় যেমন বিয়ে, পূজা,  অনুষ্ঠান, বা ধর্মীয় উৎসব। সারাবছরই মোটামুটি ফুলের চাহিদা থাকে। আপনি যদি গ্রামে ফুলের চাষ শুরু করতে পারেন তাহলে এটি হবে একটি লাভজনক গ্রামে ব্যবসা করার আইডিয়া।   আপনার এই ব্যবসা শুরু করার আগে প্রথমে কিছুটা জায়গার প্রয়োজন হবে। আর এই জায়গা ব্যবহার করে আপনি বিভিন্ন রকম ফুলের চাষ করতে পারবেন। ফুলের চাষ করার জন্য প্রথমে একটু প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হবে। আপনি চাইলে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা ইনভেস্ট করেই এ ব্যবসা শুরু করতে পারবেন। এই ব্যবসায় লস নেই বললেই চলে।

 

 উপরে আলোচনা করা ৭টি সহজ ব্যবসার আইডিয়া মধ্যে থেকে যেকোনো একটি বেছে নিয়ে আপনি আপনার নিজের ব্যবসা শুরু করতে পারেন। এছাড়াও অনেক ব্যবসা আছে যা আপনি গ্রামে বসে ব্যবসা শুরু করতে পারেন।