চিকুনগুনিয়া রোগের লক্ষণ, চিকিৎসা ও প্রতিরোধ

 

চিকুনগুনিয়া রোগের লক্ষণ, চিকিৎসা ও প্রতিরোধ

 

প্রিয় পাঠক, আশাকরি সকলে আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন। আজকে আমরা আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি চিকুনগুনিয়া রোগ নিয়ে। অনেকে ইন্টারনেটে সার্চ করে থাকেন চিকনগুনিয়া রোগের লক্ষণ এর চিকিৎসা ও এর কিভাবে প্রতিরোধ করা যায় সে  সম্পর্কে। অনেকে সঠিক সমাধান বিস্তারিত তথ্য খুঁজে পান না, তাদের জন্য আজকের পোস্টটি মূলত। আশাকরি মনোযোগ সহকারে পড়লে আপনারা উপকৃত হবেন।  

 

চিকুনগুনিয়া রোগের লক্ষণ, চিকিৎসা ও প্রতিরোধ

 

ইদানীং প্রায় সবার জ্বরের লক্ষণ একই রকম গা কাপিয়ে জ্বর, জয়েন্টে ব্যাথা, র‍্যাস এবং শরীর চুলকানো। এমন রোগী এখন ঘরে ঘরে। প্রথমে অনেকেই এটাকে বাতাসবাহিত ভাইরাস জ্বর মনে করলেও, এখন বুঝতে বাকি নেই কারও যে এটি চিকুনগুনিয়া। এডিস মশার মাধ্যমে এই জ্বর ছড়িয়ে পড়েছে ব্যাপক আকারে।

 

‘চিকুনগুনিয়া’ আফ্রিকান শব্দ, এর অর্থ ধনুর মতো বাঁকা হয়ে যাওয়া। জ্বরে হাড়ের জয়েন্টগুলি ফুলে যাওয়ার জন্য এই নামকরণ। ১৯৫২ সালে আফ্রিকার মেকন্দ, মোজাম্বিক ও তানজানিয়া এলাকায় এই রোগ মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ে। ১৯৫৫ সালে মেরিয়ন রবিনসন নামে এক চিকিৎসক প্রথম এ রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানান। ধীরে ধীরে জানা যায়, এই রোগ শুধু আফ্রিকায় নয়, দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অনেক এলাকায়ও ছড়িয়ে পড়েছে।

 

লক্ষণ:

  • সাধারণত চিকুনগুনিয়া ভাইরাস আক্রান্ত মশা কামড় দেয়ার তিন থেকে সাত দিনের মধ্যে লক্ষণ দেখা দেয়।
  • জ্বর ১০১ থেকে ১০৪ পর্যন্ত ওঠে।
  • জয়েন্টে প্রচণ্ড ব্যাথা থাকে। স্বাভাবিক হাঁটাচলা ব্যাহত হয়।
  • এছাড়াও বমি, মাথা ব্যাথা, মাংসপেশি ব্যাথা, জয়েন্ট ফুলে যাওয়া, দুর্বলতার মতো সমস্যা দেখা দেয়।

 

  • ত্বকে র‍্যাস হতে পারে। র‍্যাস হলে ত্বক চুলকায়।
  • সাধারণত এক সপ্তাহের মধ্যেই জ্বর ও ব্যাথা ভালো হয়ে যায়। তবে কোনো কোনো রোগীর
  • ক্ষেত্রে ব্যাথা এক মাস পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।

 

চিকিৎসা:

চিকুনগুনিয়ার লক্ষণ ডেঙ্গু এবং জিকার মতই। তাই চিকিৎসায় অবহেলা করা উচিত নয়।  প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ খেয়ে জ্বর নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে। প্রচুর পানি, ফলের রস, সরবত খেতে হবে। নাহলে শরীরে পানিশূন্য হয়ে যাবে।

অ্যাসপিরিন, নন-স্টেরয়েডাল কিংবা অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ওষুধ খাওয়া উচিত নয়। কারণ, যদি ডেঙ্গু হয়ে থাকে তাহলে শরীরের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।

ঝুঁকি:

সাধারণত চিকুনগুনিয়া জ্বরে রোগীর মৃত্যু হয় না। তবে নবজাতক এবং বৃদ্ধদের জন্য এই জ্বর খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। জ্বর তিনদিনের বেশি স্থায়ী হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে রক্ত পরীক্ষা করাতে হবে। একবার চিকুনগুনিয়া জ্বর হয়ে গেলে সারা জীবনে আর চিকুনগুনিয়া জ্বর হয় না।

প্রতিরোধ:

চিকুনগুনিয়া কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি এখনো। জ্বর হলে এক সপ্তাহ সাবধানে থাকতে হবে যেন মশা না কামড়ায়। কারণ, মশা কামড় দিলে মশার মাধ্যমে চিকুনগুনিয়া অন্যদের দেহে ছড়াবে। এডিস মশা নির্মূলে ফুলের টব কিংবা অন্য কোথাও পানি জমিয়ে রাখা যাবে না। দিনের বেলা মশার কামড় থেকে সাবধান থাকতে হবে।

শেষ কথাঃ প্রিয় পাঠক, চিকুনগুনিয়া রোগ সম্পর্কে মোটামুটি বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি এখানে যা আলোচনা করা হয়েছে তাতে আপনারা উপকৃত হবেন। পোস্টটি যদি ভালো লেগে থাকে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। সবাইকে সাথে থাকার জন্য অনেক ধন্যবাদ।